বিশ্ব পরিবেশ দিবস প্রতি বছর ৫ জুন পালিত হয়। এটি পরিবেশ সংরক্ষণের গুরুত্ব স্মরণ করিয়ে দেয়। ১৯৭২ সালে জাতিসংঘ এই দিবসের সূচনা করে এবং ১৯৭৪ সালে প্রথম উদযাপিত হয়। প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট থিম নিয়ে এই দিনটি পালিত হয়, যা পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। World Environment Day 2025 সালের থিম “Beat Plastic Pollution”, যার লক্ষ্য হলো প্লাস্টিক দূষণ রোধে মানুষকে উৎসাহিত করা। এই দিবসে বিশ্বজুড়ে বৃক্ষরোপণ, সচেতনতামূলক শোভাযাত্রা, পোস্টার প্রদর্শনী ও শিক্ষামূলক কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়। এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুস্থ ও সবুজ পৃথিবী গড়ার অঙ্গীকার।

World Environment Day 2025 Theme: Beat Plastic Pollution(প্লাস্টিক দূষণ রোধে ঐক্যবদ্ধ হই):
২০২৫ সালের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের থিম হলো “Beat Plastic Pollution” বা “প্লাস্টিক দূষণ রোধে ঐক্যবদ্ধ হই”। এই থিমটি প্লাস্টিক বর্জ্যের বিপর্যয়কর প্রভাব এবং তা মোকাবিলার জন্য বিশ্বব্যাপী সম্মিলিত প্রচেষ্টার গুরুত্বকে তুলে ধরে। প্লাস্টিক দূষণ আমাদের জল, মাটি, খাদ্য এবং এমনকি শরীরেও প্রবেশ করেছে। এই থিমের মাধ্যমে ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে প্লাস্টিক ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং টেকসই বিকল্পের দিকে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
Origin of World Environment Day(বিশ্ব পরিবেশ দিবসের সূচনা):
বিশ্ব পরিবেশ দিবসের সূচনা হয়েছিল ১৯৭২ সালে, যখন জাতিসংঘ (UN) সুইডেনের স্টকহোম শহরে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করে, যার নাম ছিল “United Nations Conference on the Human Environment”। এই সম্মেলন ছিল পরিবেশ সংক্রান্ত প্রথম বৈশ্বিক উদ্যোগ, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা পরিবেশ দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক সম্পদের অব্যবস্থাপনার মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
এই সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছিল ৫ জুনকে “বিশ্ব পরিবেশ দিবস” হিসেবে ঘোষণা করা। পরবর্তীতে, ১৯৭৪সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয়, এবং সে বছরের থিম ছিল “Only One Earth”। এটি ছিল একটি স্পষ্ট বার্তা যে, আমাদের পৃথিবী একটাই, এবং একে রক্ষা করাই আমাদের সকলের দায়িত্ব।
বিশ্ব পরিবেশ দিবসের লক্ষ্য ছিল মানুষের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং পৃথিবীর প্রতি দায়িত্বশীল মনোভাব গড়ে তোলা। এদিন মানুষকে পরিবেশ রক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা হয়। প্রতিবছর ভিন্ন ভিন্ন থিমের মাধ্যমে বৈশ্বিক পরিবেশগত চ্যালেঞ্জগুলোর প্রতি মনোযোগ আনা হয়, যেমন—জলবায়ু পরিবর্তন, বন উজাড়, প্লাস্টিক দূষণ, প্রাকৃতিক সম্পদের অপচয় ইত্যাদি।
এই দিবসটি কেবল একটি দিন উদযাপন নয়, বরং এটি একটি বৈশ্বিক আন্দোলনের অংশ যা পরিবেশ রক্ষায় নীতিনির্ধারক, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে একত্রিত করে। এইভাবেই বিশ্ব পরিবেশ দিবসের সূচনা হয় এবং আজ এটি বিশ্বব্যাপী এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশবাদী দিনে পরিণত হয়েছে।
Significance(কেন গুরুত্বপূর্ণ এই দিবস):
বিশ্ব পরিবেশ দিবস কেবল একটি প্রতীকী দিবস নয়; এটি একটি বৈশ্বিক আন্দোলনের অংশ। এই দিনে পরিবেশ সংরক্ষণে ব্যক্তিগত ও সামাজিক দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। বিশ্বজুড়ে ১৫০টিরও বেশি দেশে এই দিবসটি উদযাপিত হয়, যা পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
Host Country(আয়োজক দেশ):দক্ষিণ কোরিয়া:
২০২৫ সালের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের আয়োজক দেশ হলো দক্ষিণ কোরিয়া। এটি দ্বিতীয়বারের মতো এই দিবসের আয়োজক দেশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে; প্রথমবার ১৯৯৭ সালে “For Life on Earth” থিম নিয়ে আয়োজন করেছিল। এই বছর, দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু প্রদেশে মূল অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে প্লাস্টিক দূষণ রোধে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
Poster Ideas: Creative Messages for the Environment
পরিবেশ দিবসে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পোস্টার একটি কার্যকর মাধ্যম। নিচে কিছু পোস্টার আইডিয়া দেওয়া হলো:
- প্লাস্টিক মুক্ত পৃথিবী: প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিবর্তে পুনর্ব্যবহারযোগ্য সামগ্রী ব্যবহার।
- প্রকৃতির রঙে রঙিন হোক পৃথিবী: বৃক্ষরোপণ এবং সবুজায়নের গুরুত্ব।
- জল দূষণ রোধে সচেতনতা: নদী ও সমুদ্রের প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে বার্তা।
- পুনর্ব্যবহার, পুনরায় ব্যবহার, পুনরায় চিন্তা: প্লাস্টিক ব্যবহারে সচেতনতা এবং বিকল্পের দিকে অগ্রসর হওয়া।

Sources and References:
United Nations Environment Programme (UNEP): World Environment Day 2025
Times of India: World Environment Day 2025: Theme, History, Significance, Poster Ideas and Host Country
Economic Times: World Environment Day 2025: Date, theme, poster ideas, host country, significance, history
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, পরিবেশ সংরক্ষণে আমাদের প্রত্যেকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। প্লাস্টিক দূষণ রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে আমরা একটি টেকসই ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারি।