রাসায়নিক বিক্রিয়া : অধ্যায় – 2.3 –অষ্টম শ্রেণি প্রশ্ন ও উত্তর |

আমাদের এই ওয়েবসাইটে অষ্টম শ্রেণি রাসায়নিক বিক্রিয়া অধ্যায় – 2.3 ছাড়াও নতুন পাঠ্যসূচি অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নির্দেশিত প্রশ্নপত্রের নতুন কাঠামো অনুযায়ী প্রশ্নোত্তর আলোচনা করা হলো। রাসায়নিক বিক্রিয়া অধ্যায় – 2.3 ছাড়াও পাশাপাশি আমাদের এই ওয়েবসাইটে পাঠ্য বইতে উল্লেখিত এবং পর্ষদ নির্দেশিত অধ্যায় ভিত্তিক প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হয় । এমনকি এবারের নতুন holistic progress card approach অনুসারে model question paper এর উত্তরগুলি সঠিক ও নির্ভুলভাবে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এছাড়াও রাসায়নিক বিক্রিয়া অধ্যায় – 2.3 এর পাশাপাশি MCQ ,MAT ,ORQ , অতি সংক্ষিপ্ত, সংক্ষিপ্ত এবং বিশ্লেষণাত্মক ও রচনাধর্মী প্রশ্ন গুলির উত্তর আলোচনা করা হয়।
প্রিয় শিক্ষার্থীদের বলা হচ্ছে আমাদের এই ওয়েবসাইটে নিখুঁতভাবে WBBSE এর সকল প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হয়ে থাকে যা তোমাদের উপকারে আসতে পারে এবং তোমাদের পরীক্ষায় যাতে ভালো সফলতা আসে তার জন্য আমরা প্রতিনিয়তই পরিশ্রম করে চলেছি।
সর্বোপরি যাদের জন্য এই ওয়েবসাইটে নিখুঁতভাবে প্রশ্ন উত্তর দেওয়া সম্ভব হয় তাদের সকলকেই ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি এবং তোমাদের উপকার হলে আমরা আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে বলে মনে করব।

অষ্টম শ্রেণি – অধ্যায়-2.3 : রাসায়নিক বিক্রিয়া

MCQ প্রশ্ন ও উত্তর | বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্ন

১. সালোকসংশ্লেষে উৎপন্ন গ্যাসটি হল –

A. CO₂
B. O₂
C. SO₂
D. H₂
সঠিক উত্তর: B. O₂


২. জৈব অনুঘটক বা উৎসেচকগুলি প্রধানত –

A. শর্করা
B. প্রোটিন
C. লিপিড
D. অ্যাসিড জাতীয় যৌগ
সঠিক উত্তর: B. প্রোটিন


৩. জলের মধ্যে পোড়া চুন দিলে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয় কারণ –

A. পোড়া চুল খুব গরম পদার্থ
B. পোড়া চুনের সঙ্গে জলের বিক্রিয়া তাপগ্রাহী বিক্রিয়া
C. পোড়াশুনার সঙ্গে জলের বিক্রিয়া তাপ মুচি বিক্রিয়া
D. এদের কোনোটি নয়
সঠিক উত্তর: B. পোড়া চুনের সঙ্গে জলের বিক্রিয়া তাপগ্রাহী বিক্রিয়া


৪. ঝালাইয়ের কাজে ব্যবহৃত হয় –

A. মিথেন
B. ইথেন
C. অ্যাসিটিলিন
D. H₂
সঠিক উত্তর: C. অ্যাসিটিলিন


৫. একটি কঠিন বিজারক পদার্থ হল –

A. MnO₂
B. Br₂
C. Na
D. Hg
সঠিক উত্তর: A. MnO₂

৬. As³⁺ আয়ন As আয়নে পরিণত হয় –

A. জারণ হলে
B. বিজারণ হলে
C. উভয় হলে
D. কোনোটি নয়
সঠিক উত্তর: B. বিজারণ হলে

অষ্টম শ্রেণি – অধ্যায় 2.3 : রাসায়নিক বিক্রিয়া

শূন্যস্থান পূরণ প্রশ্ন ও উত্তর |

১. উষ্ণতা বাড়লে অনুর গতিশক্তি _____।

উত্তর: বাড়ে


২. সালোকসংশ্লেষে সৌরশক্তি _____ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।

উত্তর: রাসায়নিক


৩. কঠিন বিক্রিয়কের পৃষ্ঠটানের ক্ষেত্রফল বৃদ্ধি পেলে রাসায়নিক বিক্রিয়ার বেগ _____।

উত্তর: বাড়ে


৪. তরমুজের বীজে উপস্থিত এনজাইমটি হলো _____।

উত্তর: ইউরিয়েজ


৫. সূর্যে অবিরাম _____ বিক্রিয়া ঘটছে।

উত্তর: তাপমোচী


৬. ZnO + C ⟶ Zn + CO, এটি একটি _____ বিক্রিয়া।

উত্তর: বিজারণ

অধ্যায় 2.3: রাসায়নিক বিক্রিয়া

ঠিক / ভুল নির্বাচন করো |

১. মেটে বা লিভারে ক্যাটালেজ অনুঘটক থাকে।

উত্তর: ঠিক


২. নাইট্রোজেন জারিত হয়ে NH₃ উৎপন্ন করে।

উত্তর: ভুল
কারণ: NH₃ উৎপন্ন হওয়ার জন্য নাইট্রোজেনকে বিজারিত হতে হয় (ইলেকট্রন গ্রহণ করে), জারিত নয়।


৩. জারক বা বিজারক পদার্থ মৌলিক পদার্থও হতে পারে অথবা যৌগিক পদার্থও হতে পারে।

উত্তর: ঠিক


৪. কোন রাসায়নিক বিক্রিয়ার অনুঘটক বিক্রিয়ার বেগ বাড়ায় কিন্তু রাসায়নিকভাবে অংশগ্রহণ করে না।

উত্তর: ঠিক


৫. এমন কোন সর্বজনীন অনুঘটক হয় না যা সমস্ত বিক্রিয়ার বেগ বাড়াতে পারে।

উত্তর: ঠিক


৬. কোন বিক্রিয়ায় কোন অনুঘটক উপযোগী হবে তা বিক্রিয়ার সমীকরণ দেখলেই বলা যায় না, পরীক্ষা করে বার করতে হয়।

উত্তর: ঠিক


৭. কঠিন অনুঘটককে গুড়ো করে ফেললে তার ক্ষেত্রফল বাড়ে ফলে বেশি সংখ্যক অণু/আয়ন/পরমাণু বিক্রিয়া করার সুযোগ পায়।

উত্তর: ঠিক

অষ্টম শ্রেণি – রাসায়নিক বিক্রিয়া

দু-একটি শব্দে উত্তর দাও |

১. একটি জৈব দ্রাবকের নাম লেখ।

উত্তর: বেনজিন


২. ইলেকট্রোপ্লেটিং-এর সময় কোন শক্তি কোন শক্তিতে রূপান্তরিত হয়?

উত্তর: তড়িৎ শক্তি → রাসায়নিক শক্তি


৩. মরিচের সংকেত কী?

উত্তর: 2Fe₂O₃·xH₂O


৪. জলজ উদ্ভিদ বা প্রাণীদের শ্বাসকার্যের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের উৎস কী?

উত্তর: জলের দ্রবীভূত অক্সিজেন


৫. একটি পদার্থের উদাহরণ দাও যা একটি ঘনত্বযুক্ত কঠিন জারক।

উত্তর: ম্যাঙ্গানিজ ডাই অক্সাইড (MnO₂)


৬. রাসায়নিক পরিবর্তন সমাপ্ত করার একটি উপায় বলো।

উত্তর: অধঃক্ষেপণ


৭. একটি প্রাকৃতিক দহনের নাম লেখ।

উত্তর: দাবানল


৮. অক্সিজেনে কোন পদার্থের দহনে কী উৎপন্ন হয়?

উত্তর: ঐ পদার্থের অক্সাইড যৌগ


৯. দুটি পদার্থের নাম লেখ, যাদের দহনের শেষে প্রায় কোন অবশেষ থাকে না।

উত্তর: কেরোসিন ও পেট্রোল


১০. অক্সিজেনবিহীন একটি মৌলিক জারক ও যৌগিক বিজারক পদার্থের নাম বলো।

উত্তর: Cl₂ (জারক), FeCl₂ (বিজারক)


১১. একটি বিষাক্ত বিজারক পদার্থের নাম লেখ।

উত্তর: কার্বন মনোক্সাইড (CO)


১২. একটি তরল জারক ও একটি গ্যাসীয় জারক পদার্থের নাম লেখ।

উত্তর: গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিড (তরল), অক্সিজেন (গ্যাসীয়)


১৩. C এবং Cl₂ এর মধ্যে কোনটি জারক ও কোনটি বিজারক?

উত্তর: C – বিজারক, Cl₂ – জারক

রাসায়নিক বিক্রিয়া

অধ্যায় 2.3: রাসায়নিক বিক্রিয়া

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

১. রাসায়নিক বিক্রিয়া কাকে বলে?

উত্তর:
যে প্রক্রিয়ায় এক বা একাধিক পদার্থ পরস্পরের সঙ্গে বিক্রিয়া করে নতুন পদার্থ তৈরি করে, তাকে রাসায়নিক বিক্রিয়া বলে। এই পরিবর্তনে মূল পদার্থের গঠন ও ধর্ম বদলে যায়।


২. বিক্রিয়ক কাকে বলে?

উত্তর:
যেসব পদার্থ রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে, তাদের বিক্রিয়ক (Reactant) বলে। এদের মধ্য থেকেই নতুন উৎপাদ তৈরি হয়।


৩. তড়িৎ লেপন কাকে বলে? এর উদ্দেশ্য কী?

উত্তর:
তড়িৎ প্রবাহের সাহায্যে এক ধাতুর ওপর অন্য ধাতুর পাতলা স্তর বসানোর প্রক্রিয়াকে তড়িৎ লেপন (Electroplating) বলে।
উদ্দেশ্য: ধাতুকে মরচে পড়া থেকে রক্ষা করা, রূপ বা সোনার চাকচিক্য দেওয়া এবং সৌন্দর্য বা মূল্য বৃদ্ধি করা।


৪. অনুঘটক কাকে বলে?

উত্তর:
যে পদার্থ রাসায়নিক বিক্রিয়ার বেগ বাড়ায় কিন্তু নিজে বিক্রিয়ায় রাসায়নিকভাবে অংশগ্রহণ করে না, তাকে অনুঘটক বলে। এটি বিক্রিয়ার শুরু ও শেষে অপরিবর্তিত থাকে।


৫. স্বয়ং অনুঘটক কাকে বলে?

উত্তর:
যে বিক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন পদার্থই সেই বিক্রিয়ার বেগ বাড়াতে সাহায্য করে, তখন তাকে স্বয়ং অনুঘটক বলে।


৬. শিল্পে অনুঘটকের দুটি ব্যবহার লেখো।

উত্তর:

  • অ্যামোনিয়া উৎপাদনে হ্যাবার প্রক্রিয়ায় লোহা অনুঘটক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
  • সালফিউরিক অ্যাসিড উৎপাদনে ভ্যানাডিয়াম অক্সাইড (V₂O₅) অনুঘটক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

৭. উৎসেচক কাকে বলে? মানবদেহে উৎসেচকের গুরুত্ব লেখো।

উত্তর:
জৈব প্রোটিন জাতীয় পদার্থ যা দেহে বিভিন্ন জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়াকে দ্রুত করে, তাকে উৎসেচক (এনজাইম) বলে।
মানবদেহে গুরুত্ব: হজম, শ্বাসপ্রক্রিয়া, কোষে শক্তি উৎপাদনসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় উৎসেচকের ভূমিকা অপরিসীম।


৮. পাপমোচী রাসায়নিক বিক্রিয়া কাকে বলে?

উত্তর:
যে বিক্রিয়ায় চারপাশ থেকে তাপ শোষণ করা হয়, তাকে পাপমোচী (Endothermic) রাসায়নিক বিক্রিয়া বলে।


৯. নিচের বিক্রিয়াগুলি তাপমোচী কিনা ব্যাখ্যা করো:

a) কার্বনের দহন

না, এটি তাপমুক্তি (বহিঃতাপীয়) বিক্রিয়া, কারণ এতে তাপ উৎপন্ন হয়।

b) পোড়া চুন ও জলের বিক্রিয়া

না, এটি তাপমুক্তি বিক্রিয়া, কারণ প্রচুর তাপ নির্গত হয়।

c) মিথেন গ্যাসের দহন

না, এটি বহিঃতাপীয় বিক্রিয়া, তাপ ও আলো তৈরি হয়।


১০. পাপমোচী রাসায়নিক বিক্রিয়ার ব্যবহারিক প্রয়োগ লেখো।

উত্তর:

  • বরফ গলানোর জন্য রাসায়নিক লবণ ব্যবহার
  • তাপ শোষণ করে ঠান্ডা অনুভব করানোর জন্য হিমব্যাগে ব্যবহৃত অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের বিক্রিয়া

১১. পোড়া চুনে জল দিলে কলিচুন তৈরি হওয়া ছাড়াও প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয় কেন?

উত্তর:
পোড়া চুন (CaO) জল (H₂O) এর সঙ্গে বিক্রিয়া করে Ca(OH)₂ (কলিচুন) তৈরি করে। এই বিক্রিয়াটি তীব্র বহিঃতাপীয়, তাই প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয়।


১২. ঝালাইয়ের কাজে অক্সিজেন ও অ্যাসিটিলিন গ্যাসের মিশ্রণ ব্যবহার করা হয় কেন?

উত্তর:
এই দুটি গ্যাস মিশ্রিত হয়ে দহন করলে তীব্র তাপ ও আলো উৎপন্ন হয়, যা ধাতু গলানোর জন্য প্রয়োজন।
আলোক শক্তি আসে: দহনের সময় উৎপন্ন তাপ ও রাসায়নিক শক্তি থেকে।


১৩. জারণ বিক্রিয়া কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

উত্তর:
যে বিক্রিয়ায় কোনো পদার্থ অক্সিজেন গ্রহণ করে বা ইলেকট্রন হারায়, তাকে জারণ বিক্রিয়া বলে।
উদাহরণ: C + O₂ ⟶ CO₂


১৪. বিজারণ বিক্রিয়া কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

উত্তর:
যে বিক্রিয়ায় কোনো পদার্থ ইলেকট্রন গ্রহণ করে বা অক্সিজেন ত্যাগ করে, তাকে বিজারণ বিক্রিয়া বলে।
উদাহরণ: CuO + H₂ ⟶ Cu + H₂O


১৫. মরচে পরা কাকে বলে? মরচে পড়ার শর্ত লেখো।

উত্তর:
লোহা বাতাসে জলীয়বাষ্প ও অক্সিজেনের সংস্পর্শে এলে ধীরে ধীরে জারিত হয়ে লালচে-বাদামি স্তর তৈরি করে, একে মরচে পরা বলে।
শর্ত: বাতাস, জলীয়বাষ্প, অক্সিজেন


১৬. কি কি উপায়ে লোহায় মরচে ধরাই বাধা দেওয়া যেতে পারে?

উত্তর:

  • তেল বা গ্রিজ মাখানো
  • রঙ করা
  • গ্যালভানাইজ করা
  • তড়িৎ লেপন করা

১৭. লোহায় মরচে পরা একটি অবাঞ্চিত জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া — ব্যাখ্যা কর।

উত্তর:
মরচে পরা একটি ধীর গতি সম্পন্ন জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া, যেখানে লোহা ইলেকট্রন হারিয়ে জারণ হয় এবং বাতাসের অক্সিজেন ইলেকট্রন গ্রহণ করে বিজারণ হয়। এটি ধাতুর ক্ষয় ঘটায়, তাই অবাঞ্চিত।


১৮. মরচে পরাকে মৃদু দহন বলা কেন?

উত্তর:
এটি ধীরে ধীরে অক্সিজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে তাপ উৎপন্ন করে, যদিও দৃশ্যমান আগুন নেই। তাই একে “মৃদু দহন” বলা হয়।


১৯. কাটা ফলের গায়ে অনেক সময় বাদামের চোখ দেখা যায় কেন? (২–৩ বাক্যে)

উত্তর:
ফল কেটে ফেলার পর বাতাসের অক্সিজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে পলিফেনল অক্সিডেস এনজাইমের মাধ্যমে অক্সিডেশন ঘটে। ফলে বাদামি রঙ দেখা যায়। এটি একটি ধীর জারণ বিক্রিয়া।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top